কক্সবাংলা ডটকম(২১ সেপ্টেম্বর) :: বর্ষার শুরুর দিন থেকেই সারাদেশে ডেঙ্গুর গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী। এমনকী এই রোগের ফাঁদে পড়ে ইতিমধ্যেই প্রাণ হারিয়েছেন বহু রোগী।
সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় (বুধবার সকাল ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ৮৭৫ জনের মৃত্যু হলো।
তাই তো চিকিৎসকেরা সকলকেই এই অসুখ নিয়ে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। তবে মুশকিল হল, এমন বৃষ্টিমুখর আবহাওয়ায় ডেঙ্গুর পাশাপাশি ম্যালেরিয়ার প্রকোপও বাড়ছে।
আর এই দুই রোগের একই ধরনের লক্ষণের সামনে পড়ে কিংকর্তব্য-বিমূঢ় হয়ে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। তাঁরা ধরতেই পারছেন না যে ডেঙ্গুর কবলে পড়েছেন, নাকি ম্যালেরিয়ার।
তাই এই দুই মশাবাহিত রোগের লক্ষণগত তফাত জানাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
চিকিৎসকের কথায়, ডেঙ্গুর কবলে পড়া রোগীর শরীরে থাকতে পারে এইসব লক্ষণ-
১. খুব জ্বর থাকে এবং বারবার জ্বর ফিরে আসে
২. মাথা ব্যথা থাকতে পারে
৩. চোখের পিছনে ব্যথা হওয়া সম্ভব
৪. গাঁটে গাঁটে ব্যথা থাকতে পারে
৫. বমি, বমি বমি ভাব বা পেট খারাপ হওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
সুতরাং এইসব লক্ষণ দেখলেই সাবধান হন।
স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশা কামড়ালেই ম্যালেরিয়ার খপ্পরে পড়তে হয়। এক্ষেত্রে রোগীর শরীরে থাকতে পারে এইসব লক্ষণ-
১. সাধারণত দিনে একবার কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে
২. সন্ধ্যা বা রাতের দিকেই শরীরের তাপমাত্রা বাড়ে
৩. গোটা শরীর ম্যাজম্যাজ করতে পারে
৪. স্বাদ চলে যায়
৫. খাওয়ার ইচ্ছে থাকে না।
এইসব লক্ষণ দেখলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
এই প্রশ্নের উত্তরে চিকিৎসকেরা জানালেন, ডেঙ্গুতে সারাদিনে একাধিকবার কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসতে পারে। অপরদিকে ম্যালেরিয়ার ক্ষেত্রে সাধারণত দিনে একবারই জ্বর আসার আশঙ্কা থাকে। এক্ষেত্রে মূলত, রাতের দিকেই বাড়ে দেহের তাপমাত্রা। এই হল ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গু জ্বরের প্রধান লক্ষণগত তফাত। এছাড়া অন্য কোনওভাবে ক্লিনিক্যালি এই দুই রোগের মধ্য়ে তফাত করা সম্ভব নয়।
আজকাল প্রতি মুর্হূতে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার মিউটেশন হচ্ছে। ফলে চটজলদি বদলে যাচ্ছে তাদের চরিত্র। তাই ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়ার এমন বাড়াবাড়ির সময়ে ক্লিনিক্যাল আই-এর টেস্টের উপর বেশি ভরসা রাখতে হবে। এতেই দ্রুত রোগ নির্ণয় সম্ভব বলে হবে বলে জানালেন চিকিৎসকেরা ।
তাঁর মতে, এই সময় ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার পাশাপাশি টাইফয়েডের প্রকোপও বাড়ছে। তাই কোনও রোগী জ্বর নিয়ে এলে তাঁকে ৩টি টেস্টই একসঙ্গে করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এরপর টেস্টের রিপোর্ট দেখে শুরু হচ্ছে চিকিৎসা।
ডেঙ্গুর মতো ভাইরাল ডিজিজের চিকিৎসায় লক্ষণভিত্তিক চিকিৎসা করা প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে জ্বর এলে জ্বরের ওষুধ, বমি হলে বমির ওষুধ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে রোগীকে পর্যাপ্ত পরিমাণে জলপান করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এতেই রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন।
অপরদিকে ম্যালেরিয়া ও টাইফয়েডের নির্দিষ্ট ওষুধ রয়েছে। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো এই ওষুধগুলি নির্দিষ্ট ডোজে খেতে হবে। নচেৎ কোনওমতেই রোগ থেকে সেরে ওঠা সম্ভব হবে না। তাই জ্বর আসার পর যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তিনিই আপনাকে সঠিক পরামর্শ দিতে পারবেন।
সতর্কতা : প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
Posted ১০:১৮ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta